বিডিনিউজ ১০, আন্তর্জাতিক: মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্র সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় ইদলিব ও আলেপ্পো প্রদেশের পৃথক সেনা অবস্থানে মর্টার শেল থেকে গোলা ছুড়েছে তুরস্ক। এতে তাৎক্ষণিকভাবে বহু সেনা হতাহতের দাবি করছে আঙ্কারা।
তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানায়, মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে ইদলিবের দক্ষিণ উপকণ্ঠে এবং আলেপ্পোর পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত সিরিয়ান সেনা অবস্থানে হামলাগুলো চালানো হয়। যদিও এসব আক্রমণে এখন পর্যন্ত প্রকৃত হতাহত এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানানো যায়নি।
তুরস্কের সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র জানান, আমরা এবার সিরিয়ার বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে মর্টার শেল থেকে গোলাবর্ষণ করেছি। এতে তাদের বহু সেনা হতাহত হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইদলিবে সিরীয় সেনাদের মর্টার শেলের আঘাতে নিজেদের সেনা নিহতের ঘটনায় প্রতিশোধ হিসেবে এসব আক্রমণের মাধ্যমে পাল্টা জবাব দিচ্ছে আঙ্কারা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় সকালে বিদ্রোহী অধ্যুষিত অঞ্চলে অবস্থান নেয় তুরস্কের সেনাবাহিনী। এর পরপরই মর্টার শেল থেকে গোলাবর্ষণ শুরু করে সিরিয়ার সরকারি সেনারা। এতে চার তুর্কি সেনা নিহতসহ বাহিনীর আরও ৯ সদস্য গুরুতর আহত হন।
তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, রাশিয়ার সহায়তায় আসাদ বাহিনী হামলাটি চালিয়েছে। তুরস্কের সামরিক বাহিনীর অবস্থানের ব্যাপারে আগে থেকেই অবগত ছিল সিরিয়া। এর পরও আসাদের অনুগত সেনারা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে গোলাবর্ষণ করে।
যদিও এর প্রতিশোধ হিসেবে তুর্কি সেনারা এরই মধ্যে ইদলিবের ৫৪টি লক্ষ্যবস্তুতে সফলতার সঙ্গে আঘাত হেনেছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, রুশ সমর্থিত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের নির্দেশে সম্প্রতি বিদ্রোহীদের সর্বশেষ ঘাঁটি ইদলিবে জোরালো সেনা অভিযান শুরু হয়। আর এতেই নতুন করে শরণার্থীদের ঢল নামার আশঙ্কায় প্রেসিডেন্ট এরদোগান সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা ও সাঁজোয়া যান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন।
গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জাতিসংঘ জানিয়েছিল, রুশ যুদ্ধবিমানের সহায়তায় সিরিয়ার সেনাবাহিনী ইদলিব অভিমুখে অগ্রসর হওয়ায় হাজার হাজার বাসিন্দা অঞ্চলটি ছেড়ে তুরস্কের দিকে পালাচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ ৯০ হাজার মানুষ ইদলিব ছেড়ে পালিয়েছে। যার মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।
বর্তমানে তুরস্কে আশ্রিত অবস্থায় আছে আরও ৩৫ লাখের অধিক সিরিয়ান শরণার্থী। যদিও উত্তেজনার কারণে নতুন করে শরণার্থীদের ঢলের আশঙ্কায় রয়েছে পশ্চিম ইউরোপের এই দেশটি।